টার্কি মুরগীর ইতিহাস এবং বাসাবাড়িতে টার্কি পাখি পালনের সহজ উপায়।
টার্কি পাখির ইতিহাসঃ
টার্কি বা গিনিয়াফাউল মেলিয়াগ্রিডিডেই পরিবারের এক ধরণের বৃহদাকৃতির পাখিবিশেষ। যার
ওজন ১০/১৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই পাখি যখন সর্বপ্রথম আমেরিকাতে
দেখা যায় তথন অনেকে ভয়ে পালিয়ে যায়। টার্কি পাখি দেখতে মুরগির বাচ্চার মতো হলেও তুলনামূলকভাবে অনেক বড়। টার্কির বিভিন্ন জাতের মধ্যে এক
প্রজাতির বুনো টার্কি মেলিয়াগ্রিস গ্যালোপাভোর উত্তর আমেরিকা ও মধ্য আমেরিকার বনাঞ্চলে বসবাস
করতে দেখা যায়। বুনো টার্কি গৃহপালিত প্রজাতি থেকে ভিন্নতর। অন্য জীবিত প্রজাতির মধ্যে মেলিয়াগ্রিস ওসেলাটা বা চক্ষু আকৃতির
চিহ্নবিশিষ্ট টার্কি আবাসস্থল হচ্ছে ইউকাতান
উপ-দ্বীপের বনাঞ্চলে।বিশ্বের সর্বত্র
টার্কি গৃহপালিত পাখিরূপে লালন-পালন করা হয়।
আমেরিকাতে সর্বপ্রথম টার্কি মুরগী দেখতে পাওয়া যায়। ভ্রমণকালে ইউরোপীয়রা প্রথমবারের মতো টার্কিকে দেখতে পেল তখন তারা ভুলবশতঃ ভাবল যে পাখিটি এক
ধরণের গিনিয়া মুরগি (নুমিডা মেলিয়াগ্রিস)। পরবর্তীকালে
তারা তুরস্ক দেশ থেকে মধ্য ইউরোপে পাখিটিকে নিয়ে আসে। গিনিয়া মুরগি বা গিনিয়াফাউল-কে টার্কি ফাউল নামেও ডাকা হয়। তাই, তুরস্ক দেশের নামানুসারে
উত্তর আমেরিকার পাখিটির নামকরণ করা হয় টার্কি।
টার্কি মুরগী পালনে জনপ্রিয় দেশসমূহেঃ
টার্কি মুরগী গৃহপালিত পাখি হিসেবে উত্তর আমেরিকাতে সর্বপ্রথম পালন করতে
দেখা যায়।পরবীতে ১৫৫০ সালে উইলিয়াম স্ট্রিকল্যান্ড নামীয় এক ইংরেজ নাবিক টার্কি
পাখিকে ইংল্যান্ডে নিয়ে আসেন। বর্তমানে ইউরোপ সহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশে এই পাখী
কম- বেশি পালন করা হয় । পশ্চিমা দেশসমূহে টার্কি ভীষণ জনপ্রিয় । তাই সবচেয়ে বেশি
টার্কি পালন হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি,
ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, পোল্যান্ডে, ব্রাজিলে ।বাংলাদেশও টার্কি পাখি পালনে
বেশ আগ্রহী। অনেক বেকার তাদের বেকারত্ব দূর করছে পল্টী ও টার্কি বার্ড। ।বাংলাদেশে
পল্টি পালনের পাশাপাশি টার্কি মুরগী পালন ও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে বাংলাদেশেও
এখন ব্যাক্তি উদ্যোগে টার্কি চাষ শুরু হয়েছে । তৈরি হয়েছে ছোট-মাঝারি অনেক খামার।
ইলেকট্রনিক মিডিয়া আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে বেকার যুবকদের অনেকেই
টার্কি পালনে আহগ্রী হয়ে উঠেছেন। কিছু কিছু খামার থেকে টার্কির মাংস বিদেশে
রপ্তানীর চেষ্টা চলছে। অচিরেই এ পাখির মাংশ রপ্তানী অর্থনীতিতে অবদান রাখবে ধারণা
করা হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টার্কি পাখির মাংস বেশ জনপ্রিয়। টার্কি বর্তমানে
মাংসের প্রোটিনের চাহিদা মিটিয়ে অর্থনীতিতে অবদান রাখছে
কেন টার্কি পাখির জনপ্রিয়তা বেশিঃ
১. পুরুষ টার্কি ওজন ১২/১৫ কেজি ও মহিলা টার্কির ওজন
৭/১০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
২. মাংস উৎপাদন ক্ষমতা ও চাহিদা পল্টী
থেকে অনেক বেশি।
৩. টার্কির মাংস সুস্বাদু ও বিভিন্ন দেশে টার্কি উৎসব হয়ে থাকে।
৪. এটা ঝামেলাহীন ভাবে দেশী মুরগীর মত পালন করা যায় ।
৫. টার্কি পাখি ব্রয়লার মুরগীর চেয়ে দ্রুত বাড়ে ।
৬. টার্কি পালনে তুলনামূলক খরচ অনেক কম, কারণ এরা দানাদার খাদ্যের পাশাপাশি শাক, ঘাস,লতাপাতা খেতেও পছন্দ করে ।
৭. টার্কির মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি, চর্বি কম ।
৪. এটা ঝামেলাহীন ভাবে দেশী মুরগীর মত পালন করা যায় ।
৫. টার্কি পাখি ব্রয়লার মুরগীর চেয়ে দ্রুত বাড়ে ।
৬. টার্কি পালনে তুলনামূলক খরচ অনেক কম, কারণ এরা দানাদার খাদ্যের পাশাপাশি শাক, ঘাস,লতাপাতা খেতেও পছন্দ করে ।
৭. টার্কির মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি, চর্বি কম ।
৮. গরু কিংবা খাসীর মাংসের বিকল্প হিসেবে পাখির মাংস।
৯.নিয়মিত এই মাংস খেলে কোলেস্টেরল কমে যায় ।যা মানব শরীরের জন্য ভীষণ
উপকারী।কারণ এতে আছে অধিক পরিমাণ জিংক, লৌহ, পটাশিয়াম এবং বি৬ ও ফসফরাস।
১০. টার্কির মাংসে এমাইনো এসিড ও ট্রিপটোফেন অধিক পরিমাণে থাকায় এর মাংস
খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় । টার্কির মাংসে ভিটামিন ই অধিক পরিমাণে
থাকে ।
১১. টার্কি দেখতে সুন্দর, তাই বাড়ির সোভা বর্ধন করে ।
১১. টার্কি দেখতে সুন্দর, তাই বাড়ির সোভা বর্ধন করে ।
টার্কি পাখির বৈশিষ্ট্যঃ
১। ৬/৭ মাসের মধ্যে ডিম দেয়া শুরু করে ।
২। ৪/৫টি মহিলা টার্কির জন্য ১টি পুরুষ থাকতে হবে।
৩। বছরে গড়ে ৮০ থেকে ৯০ টি বাচ্ছা দেয়।
৪। ডিম ফুটে বাচ্চা বেড় হতে ২৮ দিন সময় লাগে ।
২। ৪/৫টি মহিলা টার্কির জন্য ১টি পুরুষ থাকতে হবে।
৩। বছরে গড়ে ৮০ থেকে ৯০ টি বাচ্ছা দেয়।
৪। ডিম ফুটে বাচ্চা বেড় হতে ২৮ দিন সময় লাগে ।
৫. পূর্ণাঙ্গ পুরুষ জাতীয় টার্কির মাথা ন্যাড়া থাকে।
৬. ১৪০/১৫০ দিনে পুরুষ পাখীর গড় ওজন হয় ৬-৭ কেজি এবং স্ত্রী পাখীর ৩-৪ কেজি হয়।
৭. ৯৮ থেকে ১০৫ দিনে পুরুষ পাখির বাজারজাত করনের সঠিক সময়। আর স্ত্রী পাখীর ১২০-১৪০ দিন ।
৬. ১৪০/১৫০ দিনে পুরুষ পাখীর গড় ওজন হয় ৬-৭ কেজি এবং স্ত্রী পাখীর ৩-৪ কেজি হয়।
৭. ৯৮ থেকে ১০৫ দিনে পুরুষ পাখির বাজারজাত করনের সঠিক সময়। আর স্ত্রী পাখীর ১২০-১৪০ দিন ।
৮. সাধারণতঃ এর মাথা উজ্জ্বল লাল রঙের হয়। কখনো কখনো
সাদা কিংবা উজ্জ্বল নীলাভ রঙেরও হয়ে থাকে থাকে।
৯. পুরুষ টার্কি পাখি গবলার বা টম নামেও পরিচিত।
এগুলো গড়ে লম্বায় ১৩০ সে.মি. বা ৫০ ইঞ্চি হয়।
১০. বন্য টার্কি আত্মরক্ষার্থে দ্রুত দৌড়িয়ে গা ঢাকা
দেয়। কিন্তু এটি স্বল্প দূরত্বে উড়তে পারে।
১১. স্ত্রী জাতীয় টার্কি সাধারণতঃ পুরুষ পাখির তুলনায়
ওজনে অর্ধেক হয়।
বাসা বাড়িতে টার্কি সহজে পালন করার নিয়ম গুলো জানতে পারবেন পরবর্তী
পোষ্টে, আরো বেশি বেশি জানতে চাইলে কমেন্টে জানাতে পারেন……………।
No comments